ঢাকা ০৫:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘ ১৮ বছর পর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান, বরণে বিশেষ প্রস্তুতি

নিজস্ব সংবাদ :

প্রায় ১৮ বছর লন্ডনে নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার আগমন উপলক্ষে বিএনপি ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

নেতাদের মতে, এই প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে দলের রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি নতুন গতি পাবে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে তার দেশে ফেরা বিএনপির জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তারেক রহমানের দেশে ফেরার তারিখ প্রথমে ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত ১২ ডিসেম্বর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিশ্চিত করেন যে, তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন। পরবর্তীতে ১৬ ডিসেম্বর লন্ডনে বিজয় দিবসের এক আলোচনা সভায় স্বয়ং তারেক রহমান বলেন, “ইনশাআল্লাহ, আগামী ২৫ তারিখে আমি দেশে চলে যাচ্ছি।” এই ঘোষণার পর থেকে দলের সর্বস্তরে উৎসাহের জোয়ার বইছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমানের আগমনকে ‘ঐতিহাসিক’ করতে বিএনপি কোটি নেতা-কর্মীর সমাগমের পরিকল্পনা করেছে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে তাকে স্বাগত জানাবেন কর্মীরা। মির্জা ফখরুল বলেছেন, “সেদিন সমগ্র বাংলাদেশ কেঁপে উঠবে দলীয় নেতা-কর্মীদের উৎসাহে।”

বাসভবন ও কার্যালয়ের প্রস্তুতি: গুলশানে তারেক রহমানের বাসভবন ও অফিস পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন, যা তার মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসা ‘ফিরোজা’র পাশেই। এই বাড়িটি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর সরকারিভাবে খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি দলিলপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে নিরাপত্তা ক্যানোপি, সিসিটিভি ক্যামেরা এবং অন্যান্য সুবিধা স্থাপন করা হয়েছে।

গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে তারেক রহমানের জন্য আলাদা চেম্বার তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া গুলশানের রোড ৯০-এ একটি চারতলা ভবন ভাড়া নেওয়া হয়েছে নতুন কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে, যেখান থেকে নির্বাচনি কার্যক্রম সমন্বয় করা হবে।

স্বাগত ও বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা:

তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদকে এবং সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

গত সোমবার গুলশানে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের যৌথ সভায় তারেক রহমানের স্বাগত এবং নিরাপত্তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদি আমিন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ‘আমার ভাবনায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক জাতীয় রিল প্রতিযোগিতা আয়োজিত হচ্ছে। বিজয়ীদের সঙ্গে তারেক রহমানের সরাসরি আলোচনার সুযোগ দেওয়া হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, তার নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি থাকবে না। ২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়ার পর থেকে তিনি ভার্চুয়াল মাধ্যমে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়, যেগুলোকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করে বিএনপি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তুহিন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
আপডেট সময় ০৩:২৮:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
১৭ বার পড়া হয়েছে

দীর্ঘ ১৮ বছর পর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান, বরণে বিশেষ প্রস্তুতি

আপডেট সময় ০৩:২৮:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রায় ১৮ বছর লন্ডনে নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার আগমন উপলক্ষে বিএনপি ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

নেতাদের মতে, এই প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে দলের রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি নতুন গতি পাবে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে তার দেশে ফেরা বিএনপির জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তারেক রহমানের দেশে ফেরার তারিখ প্রথমে ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত ১২ ডিসেম্বর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিশ্চিত করেন যে, তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন। পরবর্তীতে ১৬ ডিসেম্বর লন্ডনে বিজয় দিবসের এক আলোচনা সভায় স্বয়ং তারেক রহমান বলেন, “ইনশাআল্লাহ, আগামী ২৫ তারিখে আমি দেশে চলে যাচ্ছি।” এই ঘোষণার পর থেকে দলের সর্বস্তরে উৎসাহের জোয়ার বইছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমানের আগমনকে ‘ঐতিহাসিক’ করতে বিএনপি কোটি নেতা-কর্মীর সমাগমের পরিকল্পনা করেছে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে তাকে স্বাগত জানাবেন কর্মীরা। মির্জা ফখরুল বলেছেন, “সেদিন সমগ্র বাংলাদেশ কেঁপে উঠবে দলীয় নেতা-কর্মীদের উৎসাহে।”

বাসভবন ও কার্যালয়ের প্রস্তুতি: গুলশানে তারেক রহমানের বাসভবন ও অফিস পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন, যা তার মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসা ‘ফিরোজা’র পাশেই। এই বাড়িটি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর সরকারিভাবে খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি দলিলপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে নিরাপত্তা ক্যানোপি, সিসিটিভি ক্যামেরা এবং অন্যান্য সুবিধা স্থাপন করা হয়েছে।

গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে তারেক রহমানের জন্য আলাদা চেম্বার তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া গুলশানের রোড ৯০-এ একটি চারতলা ভবন ভাড়া নেওয়া হয়েছে নতুন কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে, যেখান থেকে নির্বাচনি কার্যক্রম সমন্বয় করা হবে।

স্বাগত ও বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা:

তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদকে এবং সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

গত সোমবার গুলশানে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের যৌথ সভায় তারেক রহমানের স্বাগত এবং নিরাপত্তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদি আমিন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ‘আমার ভাবনায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক জাতীয় রিল প্রতিযোগিতা আয়োজিত হচ্ছে। বিজয়ীদের সঙ্গে তারেক রহমানের সরাসরি আলোচনার সুযোগ দেওয়া হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, তার নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি থাকবে না। ২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়ার পর থেকে তিনি ভার্চুয়াল মাধ্যমে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়, যেগুলোকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করে বিএনপি।