দীর্ঘ ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন: চলছে ভোটগ্রহণ
বহুল প্রতীক্ষিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকুস) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় ২১টি ভোটকেন্দ্রের ২২৪টি বুথে ভোট শুরু হয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি ছাত্র হল এবং ১০টি ছাত্রী হলের ভোটাররা তাদের মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ভোটগ্রহণ হবে বিরতিহীন। সকাল থেকেই ভোট দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের নিয়মিত শিক্ষার্থীরাই জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারছেন। এমফিল, সান্ধ্যকালীন ও পার্ট টাইম কোর্সের শিক্ষার্থীরা জাকসুর ভোটার নন; কারণ তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী নন।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৮৪৩ জন। এর মধ্যে ৫ হাজার ৭২৮ জন ছাত্রী এবং ৬ হাজার ১১৫ জন ছাত্র। ছাত্রী ভোটার ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ, ছাত্র ভোটার ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ।
ছাত্র ভোটারদের মধ্যে আল বেরুনী হলে ২১০ জন, ১০ নম্বর ছাত্র হলে ৫২২ জন, ২১ নম্বর ছাত্র হলে ৭৩৫ জন, আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলে ৩৩৩ জন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ৩৫০ জন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে ৯৯২ জন, মওলানা ভাসানী হলে ৫১৪ জন, মীর মশাররফ হোসেন হলে ৪৬৪ জন, শহীদ রফিক-জব্বার হলে ৬৫০ জন, শহীদ সালাম-বরকত হলে ৩৯৮ জন এবং শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলে ৯৪৭ জন ভোটার রয়েছেন।
ছাত্রী ভোটারদের মধ্যে ১৩ নম্বর ছাত্রী হলে ৫১৯ জন, ১৫ নম্বর ছাত্রী হলে ৫৭১ জন, নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ২৭৯ জন, প্রীতিলতা হলে ৩৯৬ জন, ফজিলতুন্নেসা হলে ৭৯৮ জন, বীরপ্রতীক তারামন বিবি হলে ৯৮৩ জন, বেগম খালেদা জিয়া হলে ৪০৩ জন, বেগম সুফিয়া কামাল হলে ৪৫৬ জন, রোকেয়া হলে ৯৫৬ জন, জাহানারা ইমাম হলে ৩৬৭ জন ভোটার রয়েছেন।
ভোটগ্রহণ শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে গণনা করা হবে ভোট। গণনা শেষে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
তেত্রিশ বছর অপেক্ষার পর আয়োজিত জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে ফেলা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে দেড় হাজার পুলিশ, সাত প্ল্যাটুন বিজিবি ও পাঁচ প্ল্যাটুন আনসার। ক্যাম্পাসের ভেতরে-বাইরে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব পড়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই সদস্যদের ঘাড়ে।
জাকসু নির্বাচন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশরারফ হোসেন হল গেট এবং প্রান্তিক গেট ছাড়া অন্য সব গেট বন্ধ রাখা হয়েছে। ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকেই যা কার্যকর হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা পর্যন্ত বহাল থাকবে।
১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা পর্যন্ত নিরাপত্তা, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ইন্টারনেটের মতো জরুরি বিভাগ ছাড়া ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।